ঘন চুলের জন্য ভেষজ
বিনোদন ডেস্ক, ২৩ এপ্রিল : আজকের বাজে জীবনযাত্রা এবং ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে আমাদের চুলের সমস্যা বাড়ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে এবং নিজে থেকেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আপনার চুলে খুশকি বা স্ক্যাল্প ইনফেকশন না থাকলেও আপনার চুল নিজেই পড়ে যেতে পারে এবং ধীরে ধীরে তার আয়তন হারাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে চুল ঘন করতে কিছু ফলমূল ও শাকসবজি ছাড়াও চুলের জন্য কিছু ভেষজ আছে, যেগুলোর নিয়মিত সেবন আপনাকে চুল ঘন করতে সাহায্য করতে পারে। আসলে, এই ভেষজগুলির আয়ুর্বেদিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরে পিত্ত দোষের ভারসাম্য বজায় রাখে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং চুল ঘন করতে সাহায্য করে।
1. ভৃঙ্গরাজ ও ব্রাহ্মী
ভুঙ্গরাজ এবং ব্রাহ্মী এমন দুটি ভেষজ যা চুল ঘন করতে সহায়ক। ভৃঙ্গরাজের পাতা চিবিয়ে খেলে এর নির্যাস শিকড়কে পুষ্ট করে এবং চুল ঘন করতে সাহায্য করে। পাউডার বানিয়ে চুলের জন্যও ব্যবহার করতে পারেন। সকালে ও সন্ধ্যায় এক চামচ করে খান। এছাড়াও ব্রাহ্মী চুলে একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি চুল ঝলমলে রাখতে সাহায্য করে। ব্রাহ্মীর একটি বিশেষ বিষয় হল এটি ব্রণ, খুশকি ইত্যাদি কমাতেও সহায়ক। মানসিক চাপের কারণে চুল পড়ার জন্য ব্রাহ্মী খুবই কার্যকরী। এটি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায় এবং চুল ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করে। অন্যদিকে ভ্রিংরাজ ও ব্রাহ্মী একসাথে ব্যবহার করলে চুলের অকাল পাকা হওয়া বন্ধ হয়। এর ব্যবহার চুল ঘন, লম্বা ও কালো করে এবং চুল সিল্কি-সিল্কি করতেও এটি বেশ কার্যকরী।
2. অ্যালোভেরা
চুল এবং ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা সবসময়ই উপকারী বলে বিবেচিত হয়েছে। অ্যালোভেরা জেল মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে পারে যা বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। এটি আপনার চুলকে ময়শ্চারাইজ এবং হাইড্রেট করার সবচেয়ে সহজ উপায়। আপনি এর রস পান করতে পারেন এবং আপনি সরাসরি মাথার ত্বকে এর জেলও লাগাতে পারেন। সেরা ফলাফলের জন্য এটি মাথার ত্বকে লাগান এবং ম্যাসাজ করুন। অ্যালোভেরার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং সিজনাল স্কাল্প ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং এর ক্রমাগত ব্যবহার চুলের ভলিউম বাড়াতে সাহায্য করে।
3. জটামানসি
জটামানসি চুলের জন্য খুবই বিশেষ ওষুধের মতো কাজ করে। এটিতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মাথার ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া নিয়মিত জটামনসীর পানি পান করলে চুল পড়ে না এবং চুল নরম ও লম্বা থাকে। এছাড়া জটামানসি পিষে গুঁড়ো বানিয়ে প্রতিদিন অল্প অল্প করে সেবন করলে তা নতুন চুল গজাতেও সহায়ক।
4. অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধায় টাইরোসিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা চুল ঘন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই বিশেষ প্রোটিন চুল পাকা হওয়া রোধ করে এবং চুলে মেলানিনের পরিমাণ বাড়ায়। এতে চুলের রং ভালো হয়। অশ্বগন্ধার একটি বিশেষ বিষয় হল এটি নিয়মিত সেবন করলে আপনার চুল শিকড় থেকে মজবুত হয় এবং নতুন চুল গজাতেও উৎসাহিত হয়। তাই চুল সুস্থ রাখতে অশ্বগন্ধার শিকড় সিদ্ধ করে এর জল পান করুন অথবা এর গুঁড়ো গরম জলের সাথে খান।
5. আমলা এবং ত্রিফলা
আমলা এবং ত্রিফলার সংমিশ্রণ চুলকে সুস্থ রাখতে সবসময়ই সহায়ক। আমলায় রয়েছে ভিটামিন সি যা চুলকে গোড়া থেকে সুস্থ রাখে এবং এর গঠন উন্নত করে। সেই সঙ্গে ত্রিফলা খেলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে, যার ফলে আপনার চুল অনেকদিন সুন্দর থাকে।
এইভাবে, এই সমস্ত ভেষজগুলি খাওয়া আপনার চুলের জন্য খুব উপকারী। এই সবগুলির বিশেষ জিনিস হল আপনি এগুলি খেতে পারেন এবং আপনার চুলে লাগাতে পারেন। এছাড়াও চুল পড়া রোধ করতে এবং লম্বা চুলের জন্য আপনার যোগব্যায়াম করা উচিত কারণ এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং আপনার চুলকে সুস্থ রাখে।
No comments