কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রায় প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে মজুত থাকত পানের বাটা। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর পান আর খয়েরের রসে ঠোঁট লাল করে পছন্দের বই হাতে বিশ্রাম করতেন বনেদি বাড়ির গৃহিণীরা। সময়ের নিয়মে সে অভ্যেসে বদল এলেও বদলায়নি পানের প্রতি বাঙালির আসক্তি। এখনও যে কোনও নেমন্তন্ন বাড়ির শেষ পাতে পান না পেলে ঠিক তৃপ্তি পান না অনেকে। পান বানানোর হাতের গুণে বিশেষ বিশেষ দোকান তো রীতিমতো সেলিব্রিটি স্টেটাস অর্জন করে ফেলেছে! শুধু মুখশুদ্ধিই নয়, খাবার হজম করাতে পানের রস খুবই কাজের। কিন্তু এটা কি জানেন, মুখের ত্বক টানটান, উজ্জ্বল রাখতেও জরুরি ভূমিকা রয়েছে পানের? আসুন দেখে নিই, ঠিক কী কী কারণে পানকে চিরসঙ্গী করে নেবেন আপনি!
ব্রণর সমস্যায়
পানপাতার রসে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল গুণ রয়েছে, যা ব্রণ ফুসকুড়ি কমাতে দারুণ ভালো কাজ করে। কয়েকটা পানপাতা থেঁতো করে রসটা বের করে নিন, তাতে সামান্য হলুদবাটা মিশিয়ে ব্রণর উপরে লাগান, ব্রণ রাতারাতি শুকিয়ে যাবে, দাগছোপও থাকবে না।
অ্যালার্জি কমাতে
গরমে বা অন্য কোনও কারণে শরীরে র্যাশ, অ্যালার্জি বা চুলকুনি হলে পানপাতার জলে স্নান করুন। পাত্রে জল নিয়ে তাতে আট-দশটা পানপাতা ফেলে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। তারপর স্নানের জলে সেই পাতা ফোটানো জলটা মিশিয়ে স্নান করুন। ত্বক শীতল হয়ে যাবে।
ঘামের গন্ধ কমাতে
যাঁদের শরীরে ঘাম জমে দুর্গন্ধ হয়, তাঁরাও পানপাতা ফোটানো জলে স্নান করলে উপকার পাবেন। পানপাতার রসে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ রয়েছে, তাই শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়তে পারে না। জলে পানপাতা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে সেই জলটা খেতেও পারেন, তাতেও শরীরে দুর্গন্ধ হবে না। এক চামচ সাদা চিনি মিশিয়ে নেবেন শুধু।
ক্ষত শুকোতে
শরীরে কোথাও কেটেছড়ে গেলে চটপট ওষুধ হিসেবে পানপাতা লাগাতে পারেন। পানপাতা থেঁতো করে রসটা বের করে নিয়ে ক্ষতর উপরে লাগান। এবার একটা পানপাতা দিয়ে জায়গাটা ঢেকে তার উপর পরিষ্কার গজ দিয়ে আলতো করে ব্যান্ডেজ করে দিন। দু’ দিনের মধ্যে ক্ষত শুকিয়ে যাবে।
স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্যরক্ষায়
মাথায় চুলকুনি বা খুসকির সমস্যা হলে কাজে লাগান পানের রস। সাত-আটটা পানপাতা মিহি করে বেটে নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় মাসাজ করুন। আধ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু’ দিন করতে পারলেই চুলকুনি পালাবে, চুল ওঠা বা খুসকির সমস্যাও কমে যাবে।
No comments