বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিঘার পর বিঘা মাঠের ফসল। ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনে কৃষক সংগঠন।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাব উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সেভাবে প্রভাব না পড়লেও টানা দু'দিনের ভারী বৃষ্টিতে বড়সড়ো ক্ষতির মুখে বনগাঁ মহকুমার কয়েক হাজার চাষী। টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হল বনগাঁ মহকুমার বিঘার পর বিঘা মাঠের ফসল। সর্বশান্ত হওয়ার আশঙ্কায় কৃষক ও ক্ষেতমজুর।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ,তাদের বিনা মূল্যে সার, বীজ ,প্রতি মাসে ভাতা দেওয়া,
নিকাশি নালার সংস্কার সহ একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ করে বনগাঁ ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দিল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা।
আমফান, ফণী আর অকাল বৃষ্টির থাবা শেষে চলতি মরসুমে সব্জি বেচে মোটা টাকা মুনাফার স্বপ্ন দেখছিলেন সকলে। কিন্তু সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছে নিম্নচাপ। চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায় ধান ও আনাজ চাষে বড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম আনাজের উৎস ভাঙড়। ভাঙড়ের শানপুকুর, ভোগালি, পোলেরহাট, সাতুলিয়া,কচুয়া, নিমকুড়িয়া, ভগবানপুর, চন্দনেশ্বর, শাঁকশহর সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর আনাজ চাষ হয়। ধানেরও চাষ হয় এই সব এলাকায়। ফুল কপি ,বাঁধা কপি বেগুন-সহ বিভিন্ন শীতকালীন আনাজ এই সময়ে মাঠে রয়েছে। ভাঙড়ে উৎপন্ন এই সব আনাজ কলকাতা ও শহরতলি-সহ শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, দুর্গাপুরেও যায়। এমনকি দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতেও পাড়ি দিচ্ছে ভাঙড়ের আনাজ। কিন্তু টানা বৃষ্টির জেরে জমিতে জল জমে যাওয়ায় আনাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যা পরিস্থিতি, তাতে এ বার আনাজ রফতানি ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন চাষিরা।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাবে নিম্নচাপের জেরে ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শীতকালীন সবজি। সবজি চাষের জমিতে জল জমে গিয়ে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। অপরদিকে বাজারে সবজির যোগানের অভাবে দাম বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে শীতকালীন সবজির । টানা তিন দিন ধরে চলতে থাকা বৃষ্টিতে সবজির ক্ষতি হওয়ায় কৃষকদের ঋণের বোঝা বাড়বে বলে দাবি কৃষকদের । তাদের দাবি সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবেনা ।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস মতোই শনিবার সকাল থেকেই সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, স্বরুপনগর, বাদুড়িয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। কখনও ঝিরিঝিরি আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ার ফলে এলাকায় কৃষকের পাকা ধানে মই দেওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বেশীরভাগ এলাকায় জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়ে সোনালী ধান মাঠেই শুয়ে পড়েছে ।
এদিন বাদুড়িয়ার পিয়াড়া এলাকায় চাষের জমিতে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিলো এলাকার কৃষক গোপাল মণ্ডলের সঙ্গে । তিনি বলেন, বৃষ্টিতে কপি, আলু, সর্ষে সহ সমস্ত রকমের শীতকালীন শাক সবজির ক্ষতি হয়েছে। মাঠে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। সবে মাত্র আলু পোঁতা হয়েছে। কিছু কিছু জমিতে আলুর চারা বের হয়েছে। বৃষ্টি থামার পর রৌদ্র বের হলে সমস্ত গাছের শিকড় পচে যাবে। একই অবস্থা হবে সর্ষে, ফুলকপি বাঁধা কপি সহ সমস্ত শাক সবজির। প্রকৃতির খামখেয়ালীর কারনেই কৃষকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে । বৃষ্টি থামার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল যে অবস্থাতে আছে সেই অবস্থায় মাঠ থেকে তুলে দুটি পয়সার আসায় বাজারে নিয়ে যাবে । তাতে যোগান বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখতে পাবেনা কৃষকরা। আবার ওই ফসল মাঠে রাখলে পচে যাবে । কয়েকদিন পর থেকে সবজির চাহিদা অনুযায়ী বাজারে যোগান দিতে পারবেনা কৃষকরা । যত দিন
অন্যদিকে কোচবিহারে সার কেনার জন্য প্রয়োজনীয় স্লিপ পৌরসভা থেকে এখনও বিলি না হওয়ায় বিক্ষুদ্ধ কৃষকরা দিনহাটায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। মঙ্গলবার দিনহাটা মহকুমা শাসক অফিসের সামনে কোচবিহার দিনহাটা রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। দিনহাটা থানার পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখান। মহকুমা শাসক দপ্তরে গিয়েও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে৷ জানা গেছে মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের জানানো হয়েছিল পৌরসভা থেকে স্লিপ বিলি হবে। সেই স্লিপ নিয়ে সারের দোকান থেকে নায্য দামে সার কিনতে পারবেন কৃষকরা। তবে বারংবার পৌরসভায় গেলেও কোনো স্লিপ তারা পাননি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা।
মেদিনীপুর জেলায় এক চাষী আত্মহত্যা ঘটনায় বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন রাজ্যের মা মাটি মানুষ মমতা ব্যানার্জি নেতৃত্বে সরকার কোন কৃষক আত্মহত্যা করে না। এটা হয়তো কোনও পারিবারিক ঘটিত ঘটনা । বেচারাম বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেককে 10 হাজার টাকা করে দিচ্ছে । এই মুহূর্তে রাজ্যের 68 লক্ষ চাষী এই টাকাটি পেয়েছে।
মন্ত্রী বেচারাম মান্না কেন্দ্র সরকার বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন যে যারা কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি কেন্দ্র সরকার শুধু কৃষকদের ভাওতা দিয়ে গেছে।
সারের দাম তারা কমাতে পারেনি কৃষি আইন থেকে শুরু করে কৃষক সম্মান প্রকল্পের টাকা ও চাষীদের কাছে ঠিকমত পৌঁছাতে দিচ্ছে না। যেখানে রাজ্য সরকার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় 68 লক্ষ চাষীদের দশ হাজার টাকা করে দিয়েছ । উল্টে কেন্দ্র সরকার কৃষক সম্মান প্রকল্পের নাম করে রাজ্য সরকার থেকে 38 লক্ষ চাষীদের নাম নিয়েছে । বর্তনানে 25 লক্ষ চাষীদের 6000 টাকা ক্ষতিপূরণ নাম করে শুধুমাত্র এক কিস্তি দিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় জাবাদ পরিপেক্ষিতে মুষলধারে বৃষ্টি চাষীদের কৃষিজমি ক্ষয়ক্ষতি চাষের ব্যাপারে বেচারাম মান্না জানান , প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিশেষভাবে আলুচাষিদের সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে তারা আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার চাষীদের এই বিপদের সময় পাশে আছে এবং থাকবে।
জাওয়াদের পর দুষ্কৃতি হামলার আগুনে পুঁড়ল ধান।
আটবিঘে ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দিল দুস্কৃতিরা। ঘটনা চাঁচলে।ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে মাঠের এক কোণে মজুত করেছিলেন ধান। কিন্তু গভীর রাত্রে সেই ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা।এমনই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ালো মালদহের চাঁচলের গোরকপুরের একটি দ্বি ফসলের মাঠে। ৮ বিঘা জমির জমির ধান পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব ভাগচাষী।প্রশাসনের কাছে সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই কৃষক তফজ্জল হোসেন।
তফজ্জল হোসেনের আদিবাড়ি গোরকপুরে হলেও বর্তমানে চাঁচলে শহরে থাকেন। তার নিজস্ব জমিতে সে আমন ধান লাগানো সে আমন ধান লাগান। জাওয়াদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ধান এই আশঙ্কায় ধান কেটে মাঠের একপাশে জমা করে রেখেছিলেন। কিন্তু গতকাল রাত্রে সেই ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ।এদিন সাতসকালে তাফাজ্জাল বাবু শুনতে পান তার ধানের গাদায় নাকি আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুনে ভস্মীভূত আট বিঘা জমির ধান। কৃষক তাফজ্জল হোসেনের দাবি,আট বিঘে জমির ধান ছিল।প্রায় পঞ্চাশ কুইন্টাল ফলন বের হত।যার সরকারি মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা তিনি দাবি করেছেন তিনি।গোটা ঘটনা নিয়ে তিনি চাঁচল থানায় লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়েছেন।
এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য নাসের হক জানান, আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি আমি এ নিয়ে চাচোল 2 নং ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিষয়টি জানিয়েছে। ওই জমির মালিক কিছু সরকারি সহযোগিতা পেলে উঠে দাঁড়াতে পারবে।
No comments