বার্ধক্যজনিত চোখের রোগ ছানি- হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আমেরিকান ওয়েবসাইট ফ্লোরিডা টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার ফর আই রিসার্চের গবেষণায় এই দাবী করা হয়েছে। এই গবেষণার বিষয়ে মার্কিন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ম্যাথিউ গরস্কি বলেছেন, অনেক রকমের রোগ যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা ধূমপান, বর্ধিত ছানির সাথে জড়িত। তার মতে, তাই এই রোগীদের উচিৎ সময়ে সময়ে তাদের চোখ পরীক্ষা করাাানোন। বিশেষ করে যদি তিনি বয়স্ক হন বা কোনও ধরনের রোগে ভুগতে থাকেন। আপনি কতটা সুস্থ, ছানি তার সংকেত দিয়ে থাকে।
এই গবেষণাটি অস্ট্রেলিয়ায় করা হয়েছিল এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আই রিসার্চ অস্ট্রেলিয়ার একজন চিকিৎসক। তার দল 1999 এবং 2008 এর মধ্যে 40 বছর এবং তার বেশি বয়সী প্রায় 15,000 মার্কিন রোগীদের ডেটা বিশ্লেষণ করেছেন।
15,000 মার্কিন রোগীদের মধ্যে, 2,000 এরও বেশি (9.6%) বলেছেন তাদের ছানি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আনুমানিক 11 বছরের গড় ফলো-আপে, প্রায় 4,000 (19%) অংশগ্রহণকারী মারা গেছে। বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত কারণ বিবেচনা করার পর গবেষকরা দেখেছেন যে, কোনও কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি 13% বেশি এবং যারা ছানি অস্ত্রোপচার করেছিলেন তাদের হৃদরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি 36% বেশি। দলটি খুঁজে পেয়েছে যে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস (প্রাকৃতিক অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়ায় ভারসাম্যহীনতা যা কোষকে প্রভাবিত করে) এবং বিষণ্নতা ছানি গঠনকে প্রভাবিত করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এই গবেষকরা বলেছেন যে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে প্রাক-বিদ্যমান ডিএনএ ক্ষতিকর ছানি গঠনে অবদান রাখতে পারে, সেইসাথে ধমনীগুলির অস্বাস্থ্যকর সংকীর্ণতাকে উন্নীত করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান দলের মতে, গ্লুকোমায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চোখের কোন অভিযোগ নেই এমন লোকদের তুলনায় ছানি অস্ত্রোপচারের পরে অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এই ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।
ছানি কি এবং কেন হয়?
সহজ ভাষায় বলতেে গেলে চোখে সাদা ছোপ ছোপ দাগ তৈরি হওয়াকে ছানি বলে। এটি হলে আক্রান্ত ব্যক্তি সবকিছু ঝাপসা দেখতে পায়। রোগীদের হাঁটতেও অসুবিধা হয়, বিশেষ করে রাতে। সময়মতো চিকিৎসা না করালে রোগী স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। এটি সাধারণত বয়স্কদের রোগ। বৃদ্ধ বয়সে সিগারেট ও অ্যালকোহল নিলে ছানি পড়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
No comments