কুড়িয়ে পাওয়া প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা মালিকের হাতে তুলে দিলেন এক হোটেল ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সকালে ওই টাকা মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি প্রদীপ মিশ্র নামে কলকাতার এক পান মশলা ব্যবসায়ী।
কলকাতার বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা পান মশলা ব্যবসায়ী প্রদীপ মিশ্র ব্যবসার কাজে বীরভূমে এলে উঠতেন ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট মাড়গ্রাম মোড় সংলগ্ন লক্ষ্মী অনুষ্ঠান ভবনে। গত রবিবার সকালে হোটেল ছেড়ে যাওয়ার সময় একটি কালো প্লাস্টিকে জড়িয়ে ৪,৪৮,৫০২ টাকা হোটেলের বাইরে একটি চেয়ারের উপর ফেলে রেখে রায়গঞ্জ চলে যান।
কেউ কেউ ওই চেয়ারে প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখে আবর্জনা ভেবে ফেলে দিতে যান। কিন্তু হোটেল মালিক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল সেই প্যাকেট সযত্নে নিজের হেফাজতে রাখেন। বিকেলের দিকে সেই প্যাকেট খুলে দেখেন কয়েকটি ৫০০ টাকার বান্ডিল। এরপর ফের প্লাস্টিক জড়িয়ে রেখে সিসিটিভি ক্যামেরায় নজর রাখতে শুরু করেন। দেখতে পান সকাল ১০ টার পর ওই টাকার বান্ডিল চেয়ারে অসাবধান বসত ফেলে গিয়েছিলেন প্রদীপ মিশ্র।
এরপরেই লজ ব্যবসায়ী যোগাযোগ করেন প্রদীপবাবুর সঙ্গে। মঙ্গলবার ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হল তার সংস্থার কর্মী গণেশ কুমারের হাতে।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "সততাই আমাদের মূল ধন। অসৎ উপায়ে আয়ের উপর আমাদের কোন লাভ নেই। আমরা ব্যবসা করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই। তাই ওই টাকার বান্ডিল পাওয়ার পরও আমার মনে একটুও লোভ বাসা বাঁধতে পারিনি। তবে একটা আশঙ্কাও এখন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দিন অনুষ্ঠান ভবনে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। ফলে বেশ কিছু মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে লজে যাতায়াত করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ যদি ওই টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতেন তাহলে বদনামের ভাগীদার হয়তো আমাদের হতে হতো। তাছাড়া ওই টাকা ফেরত না পেলে প্রদীপ মিশ্রর হয়তো চাকরি থাকত না"।
গণেশবাবু বলেন, “কোম্পানির লোক এখানে থাকতেন। তিনি অসাবধানবশত টাকাটা ফেলে গিয়েছিলেন। লজ ব্যবসায়ীর জন্যই টাকা ফেরত পেলাম”।
ফোনে প্রদীপ মিশ্র বলেন, “আমি কোম্পানির একজন বর্ষীয়ান কর্মী। ওই টাকা রামপুরহাটের ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ থেকে নিয়ে রায়গঞ্জে কোম্পানির কাছে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অসবাধান বশত আমি ফেলে এসেছি। ওই টাকা চলে গেলে আমি সারা জীবন কাজ করেও পরিশোধ করতে পারতাম না। লজ ব্যবসায়ী না থাকলে আমার সব চলে যেত”।
No comments