৪৬ বছর আগের একটা ছবি। যা নিয়ে কথা বলেন আজকের তরণরাও। আজ থেকে ৪৬ বছর পরেও কথা বলবেন। এমনই সে ছবির আকর্ষণ, এমন তার কীর্তি। ছবির প্রত্যেক চরিত্রকে নিয়ে অজস্র কৌতুক এবং অভিনয় করে বহু মানুষের পেট আজও চলছে। ঠিকই ধরেছেন, ছবির নাম শোলে। আর এই ছবিতেই সকলকে পিছনে ফেলে প্রচারের আলো টেনে নিয়েছিলেন ছবির ভিলেন গব্বর সিং।
আমন জাঁদরেল ভিলেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বিরল। ডাকতদের নিয়ে ছবি বলিউডে কম হয়নি। তবে ডাকাত বললে যার কথা সবার আগে মনে পড়ে তিনি গব্বর ছাড়া আর কেউ নন। এই চরিত্র অমর করে রেখেছেন আমজাদ খান।
বলিউডে সাধারণত নায়ক-নায়িকারাই বড় বিজ্ঞাপনী সংস্থার মুখ হয়েছেন বরাবর। এমনটাই রীতি। ফ্যাশন থেকে টুথ পেস্ট সবেতেই সকলে নায়কের পছন্দ অনুযায়ী চলতে চান। কারণ হিন্দি সিনেমায় নায়করা হলেন দেবতুল্য। নায়িকারা দেবী। ভিলেন সেখানে রাবণের বরপুত্র। কিন্তু গব্বর সেই মিথের মুখে ঝামা ঘসেছিলেন। গব্বর মানে আমজাদ খান। তাঁর চরিত্র এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে বড় সংস্থার বিজ্ঞাপনে মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।"
"শোলে কাল্টে পরিণত হওয়ার পর ব্রিটানিয়া-র গ্লুকোজ ডি বিস্কুটের বিজ্ঞাপনে গব্বরে ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল আমজাদ খানকে। প্রেক্ষাপট সেই পাথুরে জমি। যেখানে কার্তুজ ভরা বেল্ট আছড়ে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছেন গব্বর। তাঁর জন্য গ্রাম থেকে বিস্কুট লুঠ করে নিয়ে আসে কালিয়া। তার পর কী ভাবে 'অসলি চিজ' হাতে আসে তা নিয়েই বিজ্ঞাপন।
শোলে ছবির জন্য তাঁর নাম পরিচালক রমেশ সিপ্পি-র কাছে সুপারিশ করেন চিত্রনাট্যকার সেলিম খান। যিনি জাভেদ আখতারের সঙ্গে মিলে ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। প্রথম দিকে অভিনয় এবং আমজাদের হাস্কি ভয়েস পছন্দ হয়নি পরিচালকের। প্রায় বাদ যাওযার মতো অবস্থাও হয়েছিল আমজাদের। অন্য দিকে, গব্বরের চরিত্রটি করার জন্য নাছোড়বান্দা হয়েছিলেন সঞ্জীব কুমার এবং অমিতাভ বচ্চন। তবে সে সবে কান দেননি রমেশ সিপ্পি।"
"খানিকটা অভিমানেই সেলিম খান আমজাদকে সিনেমা থেকে বাদ দিতে বলেন। পরবর্তী কালে সিনেমায় থাকলেও তাঁর ভয়েস পছন্দ না হওয়ায় ডাবিং করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সেলিম। সে কথা আমজাদের কানে পৌঁছানোর পর এতটাই রাগ হয়েছিল আমজাদের, তিনি ঠিক করেছিলেন এর পর থেকে সেলিম-জাভেদের সঙ্গে আর কাজ করবেন না তিনি। কথা রেখেছিলেন আমজাদ। তাতে ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় দর্শকদের। বেশ কিছু ভালো সিনেমা থেকে বঞ্চিত হয়েছে তাঁরা। হয়তো শোলের মতো কোনও কাল্ট সিনেমা পায়নি।"
No comments