আফগানিস্তানে দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটছে নাগরিকদের। অর্থনীতি ধুঁকছে, বেতন পাচ্ছেন না সরকারি কর্মীরা। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই। সামনে চরম অনিশ্চয়তা আফগানদের। এ অবস্থায় আজ-কালের মধ্যেই নতুন সরকারের শীর্ষ নেতার নামসহ সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করতে যাচ্ছে নাটকীয়ভাবে ক্ষমতা দখল করা তালেবান।
সোমবার গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর মেয়াদি যুদ্ধের ইতি টেনে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে বিদেশি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত হয় দেশটি। তালেবান যোদ্ধারা মার্কিন সেনাদের বিদায়ে উল্লাস করলেও দেশটি এখন জটিল নানা সমস্যার মুখোমুখি। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি শরণার্থী সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। পাঁচ লাখের বেশি আফগান অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়েছেন। দেশটির বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় পালানোর চেষ্টারত লোকজন সীমান্তগুলোতে গিয়ে জড়ো হচ্ছেন।আফগানিস্তান ত্যাগের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি সৃষ্টি করা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্যস্থল করা অব্যাহত রাখবে ওয়াশিংটন। কিন্তু কখনোই গণতন্ত্র ছিল না- এমন দেশগুলোতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার আর চেষ্টা করবে না। এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন বলেছেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের ফল শূন্য। যুদ্ধে সেখানে শুধু সব পক্ষের জীবন ক্ষয়ই হয়েছে। অন্য কোনো দেশের ওপর নিজেদের মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে প্রশাসনিক শূন্যতা দেখা দিয়েছে আর মানবিক সংকটের শঙ্কার মধ্যে কীভাবে সাড়া দেওয়া যায়, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিদেশি দাতারা। যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর ব্যাংক, হাসপাতাল ও সরকারি প্রশাসন সচল রাখায় মনোনিবেশ করছে তালেবান। এর মধ্যেই গতকাল বুধবার ব্যাংকগুলোতে লম্বা লাইন দেখা গেছে।
কাবুল বিমানবন্দর অকার্যকর থাকায় যেসব আফগান তালেবানের প্রতিশোধের শঙ্কায় আছেন, তাদের নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ায় সহায়তা করতে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। চারদিকে স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সঙ্গে ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সীমান্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র কাবুল থেকে আকাশপথে এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নিলেও আরও লক্ষাধিক মানুষ যেতে পারেননি। শুধু জার্মানির হিসাবেই সেখানে তাদের উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কাজ করা ১০ থেকে ৪০ হাজার আফগান কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। এদিকে, কাবুল বিমানবন্দর দু-এক দিনের মধ্যে সচল হবে বলে জানিয়েছেন এক তালেবান নেতা। ইতোমধ্যেই কাতার থেকে কারিগরদের কাবুলে নিয়ে আসা হয়েছে।
আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় যারা বিদেশি বাহিনীগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে তালেবান। দলটির নেতারা মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আফগানদের দেশে ফিরে পুনর্গঠনে সহায়তা করারও আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বহু মানুষই তালেবানের আশ্বাসে ভরসা করতে পারছেন না।
নতুন সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে তালেবান :নতুন সরকার ঘোষণা করতে যাচ্ছে তালেবান। এই সরকারের সুপ্রিম লিডার বা শীর্ষ নেতা হচ্ছেন হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা। তালেবান কর্মকর্তারা জানান, তার উপাধি হতে পারে জাইম বা রাহবার। এর অর্থ নেতা। তার পদবি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির মতোই হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবারই এ ঘোষণা আসতে পারে বলে তালেবান নেতা বিলাল কারিমি জানিয়েছেন।
এ সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ভার থাকবে তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার হাতে। সরকারের আরেক গুরুত্বপূূর্ণ পদে আসতে পারেন আখুনজাদার সহযোগী মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব। তবে তালেবানের এক নেতা জানিয়েছেন, নতুন সরকারের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে কোনো নারীকে রাখার সম্ভাবনা কম। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের দেখা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার :যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের হামলার পর আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান ও সিরিয়ায় যুদ্ধে আগামী বছরের শেষ নাগাদ ব্যয় পাঁচ লাখ ৮০ হাজার কোটি ( ৫.৮ ট্রিলিয়ন) ডলারে পৌঁছবে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ার প্রজেক্ট এ হিসাব দিয়েছে। এ হিসাবের মধ্যে যুদ্ধে ব্যয়ের সুদও ধরা হয়েছে।
যুদ্ধের জন্য আগামী বছরগুলোতেও বিপুল অর্থ খরচ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। যেমন ২০৫০ সাল পর্যন্ত প্রবীণ সেনাদের চিকিৎসায় খরচ হবে দুই লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ধার করা অর্থে আফগানিস্তান ও ইরাকে যুদ্ধ চালিয়েছে। এতদিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আফগান যুদ্ধের ব্যয় দেখানো হতো দুই লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপি ও রয়টার্স।
আফগানিস্তানে দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটছে নাগরিকদের। অর্থনীতি ধুঁকছে, বেতন পাচ্ছেন না সরকারি কর্মীরা। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই। সামনে চরম অনিশ্চয়তা আফগানদের। এ অবস্থায় আজ-কালের মধ্যেই নতুন সরকারের শীর্ষ নেতার নামসহ সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করতে যাচ্ছে নাটকীয়ভাবে ক্ষমতা দখল করা তালেবান।সোমবার গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর মেয়াদি যুদ্ধের ইতি টেনে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে বিদেশি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত হয় দেশটি। তালেবান যোদ্ধারা মার্কিন সেনাদের বিদায়ে উল্লাস করলেও দেশটি এখন জটিল নানা সমস্যার মুখোমুখি। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি শরণার্থী সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। পাঁচ লাখের বেশি আফগান অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়েছেন। দেশটির বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় পালানোর চেষ্টারত লোকজন সীমান্তগুলোতে গিয়ে জড়ো হচ্ছেন।আফগানিস্তান ত্যাগের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি সৃষ্টি করা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্যস্থল করা অব্যাহত রাখবে ওয়াশিংটন। কিন্তু কখনোই গণতন্ত্র ছিল না- এমন দেশগুলোতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার আর চেষ্টা করবে না। এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন বলেছেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের ফল শূন্য। যুদ্ধে সেখানে শুধু সব পক্ষের জীবন ক্ষয়ই হয়েছে। অন্য কোনো দেশের ওপর নিজেদের মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়া যায় না।তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে প্রশাসনিক শূন্যতা দেখা দিয়েছে আর মানবিক সংকটের শঙ্কার মধ্যে কীভাবে সাড়া দেওয়া যায়, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিদেশি দাতারা। যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ার পর ব্যাংক, হাসপাতাল ও সরকারি প্রশাসন সচল রাখায় মনোনিবেশ করছে তালেবান। এর মধ্যেই গতকাল বুধবার ব্যাংকগুলোতে লম্বা লাইন দেখা গেছে।কাবুল বিমানবন্দর অকার্যকর থাকায় যেসব আফগান তালেবানের প্রতিশোধের শঙ্কায় আছেন, তাদের নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ায় সহায়তা করতে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। চারদিকে স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সঙ্গে ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সীমান্ত রয়েছে।খাইবার গিরিপথের পূর্ব পাশে পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং তোরখামে এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তানের পাশে বিপুলসংখ্যক লোক সীমান্তের গেট খোলার অপেক্ষায় আছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে থাকা ইসলাম কালা সীমান্ত পোস্টেও কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন।যুক্তরাষ্ট্র কাবুল থেকে আকাশপথে এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নিলেও আরও লক্ষাধিক মানুষ যেতে পারেননি। শুধু জার্মানির হিসাবেই সেখানে তাদের উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কাজ করা ১০ থেকে ৪০ হাজার আফগান কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। এদিকে, কাবুল বিমানবন্দর দু-এক দিনের মধ্যে সচল হবে বলে জানিয়েছেন এক তালেবান নেতা। ইতোমধ্যেই কাতার থেকে কারিগরদের কাবুলে নিয়ে আসা হয়েছে।আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় যারা বিদেশি বাহিনীগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাদের সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে তালেবান। দলটির নেতারা মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আফগানদের দেশে ফিরে পুনর্গঠনে সহায়তা করারও আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বহু মানুষই তালেবানের আশ্বাসে ভরসা করতে পারছেন না।নতুন সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে তালেবান :নতুন সরকার ঘোষণা করতে যাচ্ছে তালেবান। এই সরকারের সুপ্রিম লিডার বা শীর্ষ নেতা হচ্ছেন হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা। তালেবান কর্মকর্তারা জানান, তার উপাধি হতে পারে জাইম বা রাহবার। এর অর্থ নেতা। তার পদবি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির মতোই হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবারই এ ঘোষণা আসতে পারে বলে তালেবান নেতা বিলাল কারিমি জানিয়েছেন।এ সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ভার থাকবে তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার হাতে। সরকারের আরেক গুরুত্বপূূর্ণ পদে আসতে পারেন আখুনজাদার সহযোগী মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব। তবে তালেবানের এক নেতা জানিয়েছেন, নতুন সরকারের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে কোনো নারীকে রাখার সম্ভাবনা কম। তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের দেখা যেতে পারে।যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার :যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের হামলার পর আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান ও সিরিয়ায় যুদ্ধে আগামী বছরের শেষ নাগাদ ব্যয় পাঁচ লাখ ৮০ হাজার কোটি ( ৫.৮ ট্রিলিয়ন) ডলারে পৌঁছবে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ার প্রজেক্ট এ হিসাব দিয়েছে। এ হিসাবের মধ্যে যুদ্ধে ব্যয়ের সুদও ধরা হয়েছে।যুদ্ধের জন্য আগামী বছরগুলোতেও বিপুল অর্থ খরচ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। যেমন ২০৫০ সাল পর্যন্ত প্রবীণ সেনাদের চিকিৎসায় খরচ হবে দুই লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ধার করা অর্থে আফগানিস্তান ও ইরাকে যুদ্ধ চালিয়েছে। এতদিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আফগান যুদ্ধের ব্যয় দেখানো হতো দুই লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপি ও রয়টার্স।
No comments