যমুনা নদীর তীরে আগ্রা শহরটি তাজ নাগরী নামেও পরিচিত। তাজমহল বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি। উত্তরপ্রদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর আগ্রা। আগ্রা একটি ঐতিহাসিক শহর। আগ্রার ইতিহাস মূলত মুঘল আমল থেকেই জানা যায়। আগ্রা শহরে ১৫০৬ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার লোদি বসতি স্থাপন করেছিলেন। আগ্রা মুঘল সাম্রাজ্যের একটি প্রিয় জায়গা ছিল। আগ্রা ১৫২৬ থেকে ১৬৫৮ সাল পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। আজও, তাজমহল, লাল কেল্লা, ফতেহপুর সিক্রি ইত্যাদির মতো মুঘল ভবনগুলির কারণে আগ্রার একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র ।
তাজমহল: তাজমহল শাহজাহানের প্রিয় বেগম মমতাজের মহল। তাজমহল বিশ্বের সাতটি বিস্ময়ের মধ্যে একটি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর বেগম মমতাজ মহলের স্মরণে এটি নির্মাণ করেছিলেন। এই স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি করতে বাইশ বছর (১৬৩০-১৬৫২) সময় লেগেছে। সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি এই সমাধিটি বর্গক্ষেত্রের ভিত্তিতে তৈরি। এই সুন্দর প্রাসাদটি প্রেমের প্রতীক হিসাবেও বিবেচিত হয়। তাজমহল প্রতি শুক্রবার বন্ধ থাকে।
ফতেহপুর সিক্রি: ফতেহপুর সিক্রি তাজমহল থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মোগল সম্রাট আকবর ফতেহপুর সিক্রি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আকবর ফতেহপুর সিক্রিতে সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং, বুলান্দ দরওয়াজা তৈরি করেছিলেন, যা মাটি থেকে ২৮০ ফুট উপরে অবস্থিত। ৫২ টি ধাপে আরোহণের পরে দরজার ভিতরে পৌঁছানো যায়। এটি লাল এবং বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। সুফি সাধক শেখ সেলিম চিশতীর সমাধিও এখানে রয়েছে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী ফতেহপুর সিক্রি মুঘল সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রতীক।
আগ্রার কেল্লা: আগ্রার আরেকটি ঐতিহ্যবাহী স্থান হ'ল আগ্রা ফোর্ট। আগ্রার দুর্গটি আকবর দ্বারা ১৫৬৫ সালে নির্মিত হয়েছিল। পরে তাঁর নাতি শাহজাহান লাল বেলেপাথর দিয়ে এই দুর্গটি পুনরুদ্ধার করেছিলেন। এই দুর্গের প্রধান ভবনের মধ্যে রয়েছে মতি মসজিদ, দিওয়ান-ই-আম, দিওয়ান-ই-খাস, জাহাঙ্গীর মহল, খাস মহল, শীশ মহল এবং মুসমান বুর্জ। এর এই প্রাচীন স্থাপত্য দেখতে বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসেন।
জামে মসজিদ: আগ্রার জামে মসজিদ শাহজাহানের কন্যা জাহানারা বেগমের প্রতি নিবেদিত। এই বিশাল মসজিদটি ১৬৪৮ সালে নির্মিত হয়েছিল। লাল বেলেপাথর এবং ছোট সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি জামে মসজিদটি খুব সুন্দর। জামে মসজিদটি সূফী শেখ সেলিম চিশতীর সমাধিকে উপেক্ষা করেছে, যিনি শিল্পের এক বিস্ময়কর অংশ। জামে মসজিদের খোদাই কার্য খুব সুন্দর। উন্নত দরজা দিয়ে জামে মসজিদ পৌঁছানো যায়।
No comments